কতো দিন দেখি না মাকে
(সারা দুনিয়ার মা হারা সন্তানদের জন্য আমার এই কবিতাটি)
কতো দিন যে হলো- আর দেখি না আমার মাকে
পেটের ভিতর থাকতে কী রকম কষ্ট দিয়েছি !
মনে নেই যখন ভূমিষ্ট হয়েছি সেই সময়কার কষ্ট দেয়া
এরপর দীর্ঘ দিনের অবুঝ শিশু হয়েও কষ্ট দিয়েছি অবিরত
আমার এত কষ্ট দেয়া মার কাছে ছিল সবই মধুর
যেমন আমার জীবন মধুর তার কাছে
জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি।
দুষ্টুমি আর খেলার ছলে ক্ষণিক মায়ের মুখের বকা
তাতেও ছিল ভয়ের মধু খেয়েছি তা আপন মনে।
সুখ ছিল যেই পাঠশালাতে তার চাইতেও অনেক সুখ
পেয়েছি আমি বাড়ি ফিরে তাঁর আঁচলে লুকিয়ে মুখ।
খাবার দিতো যত্ন করে, মায়াভরা দুটি হাতে
পেট ভরে যায় তবুও দেখি থালা ভরা শুধুই ভাতে।
মায়ের কাছে সন্তানেরা আজো সেই ছোট্ট খোকা
আকাশ ভরা তারায় মেলায় ভাঁসে তাদের রঙিন ভেলা।
কখন আমি বড় হলাম পাই না খুঁজে সেই কারণ
বাবার দিকে তাকিয়ে দেখি এখন সুস্থ থাকাই তার বারণ।
কবর দেশের যাত্রী আমার সেই পূর্ণ শশী জননী
যাওয়ার পরেই বুঝতে পারি এখন আমি বড় হলাম না জানি!
এখন আমার জীবন কাটে আদর মাখা গালি ছাড়া
খাবার নিয়ে কেউ বসে থাকলেও তাদের থাকে অনেক তাড়া।
কষ্টে আমার অশ্রুধারায় ভিঁজে যায় সব গায়ের পোশাক
আঁচল পাই না একটিও খুঁজে এই অশ্রুধারা মুছে দেবার।
এখন শুধু মনের মাঝে হাহাকার আর আর্তনাদে
রাতের বেলা পিতা হয়ে ঘুমিয়ে থাকি বধূর পাশে
আজও রাতে তারা ওঠে আকাশ ভাঁসে জোছনা দিয়ে
আমার রাতের তারাগুলো হারিয়ে গেছে কোন্ সুদূরে!
কষ্টে আমার রাত পোহায়না কান্না শুনি বুকের মাঝে
ওঠে বসি গভীর রাতে-
কতো দিন যে হয়ে গেল- আর দেখি না আমার মাকে!
কাব্যগ্রন্থঃ কবর থেকে বলছি